১১ এপ্রিল ২০২২, ঢাকা:
টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিবর্তন, ব্যাপক সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং অপরিমেয় অবকাঠামোগত উন্নয়নের সাথে সংযুক্ত একটি স্বয়ংক্রিয় এবং কাঠামোগত কমোডিটি এক্সচেঞ্জ স্থাপন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অসংখ্য স্টেক হোল্ডার- কৃষক / উৎপাদক থেকে শেষ ব্যবহারকারী পর্যন্ত মূল্য স্থিতিশীলতার মাধ্যমে ফসল-পরবর্তী ক্ষতি হ্রাস, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এবং আমদানিকৃত সরবরাহ উভয়ের জন্য পণ্য মূল্য ঝুঁকির উন্নতি, দক্ষ ঋন ঝুকিঁ ব্যবস্থাপনা, একটি স্বচ্ছ এবং প্রতিযোগীতামূলক মূল্য আবিষ্কারের ব্যবস্থা, লেনদেন এবং বিপণন ব্যয় ইত্যাদি হ্রাস করবে।
চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ লি. (সিএসই) কর্তৃক বাংলাদেশের পুজিঁবাজারের উন্নয়নের জন্য বিশেষ উদ্ভোধনী ধারণা এবং উল্লেখযোগ্য কাঠামোগত সংস্কারের ধারাবাহিক অগ্রনী উন্নয়নের অংশ হিসেবে ২০২১ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশে প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন থেকে অনুমোদন পেয়েছে । এই উদ্দেশ্যে সিএসই ইতিমধ্যে একটি মেীলিক ধারণাপত্র তৈরী করেছে এবং তা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে প্রেরণের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মপন্থা পরিচালনার সম্মতি পেয়েছে । কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করার জন্য বেশ কিছু সময়সাপেক্ষ এবং জটিল প্রক্রিয়া বা ধাপ পার হতে হবে ।
এখানে উল্লেখ্য যে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সম্মতির আলোকে সিএসই নিম্মলিখিত ক্ষেত্র এবং কাজের সুযোগ চিহ্নিত করেছে :
- উপবিধি, বিধি ও প্রবিধান এবং ব্যবসায়িক বিধির উন্নয়ন;
- পণ্য সনাক্তকরণ এবং চুক্তি তৈরী;
- ব্যবসায়িক পরিকল্পনার উন্নয়ন : এখানে একটি স্বত:স্ফুর্ত কমোডিটি এক্সচেঞ্জ স্থাপন এবং পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় দিকগুলোকে এবং প্রস্তাবিত এক্সচেঞ্জ / প্ল্যাটফর্ম ইত্যাদির জন্য আর্থিক অনুমান / প্রোজেকশনকে অন্তর্ভুক্তকরণ;
- ট্রেডিং এবং বাজার নজরদারীর প্রয়োজনীয়তা: এতে ট্রেডিং প্যারামিটার, প্রয়োজনীয়তা এবং বাজার নজরদারীর প্রক্রিয়ার জন্য একটি ফ্রেমওয়ার্ক থাকবে;
- ক্লিয়ারিং এবং সেটেলম্যান্ট সিস্টেম: এটি একটি কার্যকরী ক্লিয়ারিং এবং সেটেলমেন্ট মেকানিজম প্রতিষ্ঠার জন্য পুরো প্রক্রিয়ার রুপরেখা প্রদান করবে;
- গুণমান নিশ্চিতকরণ, গুদামজাতকরণ এবং পণ্য সরবরাহ অবকাঠামো: এটি হচ্ছে দুরদর্শী বুদ্ধিমত্তা এবং প্রায়োগিক গুণগত মান পরীক্ষা এবং এক্সচেঞ্জের গুদামজাতকরণের প্রক্রিয়ার সমাধানের ব্যবস্থা করবে;
- মানব সম্পদের উন্নয়ন এবং সচেতনতা সৃষ্টি;
বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে, একটি সুসংগঠিত কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করা হবে বাংলাদশের জন্য একটি নতুন সূচনা এবং বিস্তৃত গবেষণার ভিত্তিতে এটি চিত্রিত হয়েছে যে, প্রয়োজনের সাথে মিল রেখে একটি অফশোর পরামর্শদাতার নিয়োগ, সর্বস্তরের সচেতনতা সৃষ্টি এবং উপযুক্ত বাস্তবায়নের পদ্ধতিগুলি বিবেচনা করা হলো মূল বিষয়। আশানুরুপ আদর্শ কমেডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পণার পূর্বে জ্ঞান -ভিত্তিক ব্যবধান/স্বল্পতা কমিয়ে আনাই হচ্ছে ফোকাল বিষয়। এক্ষেত্রে বেশ কিছু দেশীয় গবেষণা হয়েছে কিন্তু এগুলো প্রতিবেশী এবং উন্নত দেশগুলো যাদের ইতিমধ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত কমোডিটি এক্সচেঞ্জ আছে তাদের তুলনায় অপর্যাপ্ত।
অতএব, অফশোর কনসালট্যান্ট এবং আমাদের যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে কমোডিটি এক্সচেঞ্জে স্থাপনের শুভ সূচনা করাটা জরুরী। সংশ্লিষ্ট কাজের প্রক্রিয়াগুলি নিম্মরুপ:
- বাংলদেশের প্রেক্ষাপটে নিবিড় গবেষণা এবং এক্সিমপ্লিফাইড সম্ভাব্যতা স্টাডির মাধ্যমে একটি সুসংগঠিত বাস্তবায়ন কৌশলের উপায় বের করা ।
- কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির জন্য সমস্ত মূল স্টেকহোল্ডারদের, বিশেষ করে যারা কৃষি-পন্য বিপণন ব্যবস্থা, গুদাম প্রাপ্তি ব্যবস্থা, নীতিনির্ধারক, বানিজ্য সংস্থা, উন্নয়ন অংশীদার ইত্যাদির সাথে জড়িত তাদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করা ।
- আইনি ও নিয়ন্ত্রক অবকাঠামো উন্নয়ন । এক্ষেত্রে অন্যান্য সফল কমোডিটি এক্সচেঞ্জের নিয়ন্ত্রক কাঠামোর বিষয়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে।
- ব্যবসার জন্য উপযুক্ত পন্য সনাক্ত করার জন্য নির্দিষ্ট ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সাথে সহযোগীতার সমন্বয় করা ।
- অংশগ্রহণকারীদের জন্য সচেতনতা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মসূচি গ্রহণ করা ।
- জ্ঞান বিনিময় এবং রেফারেন্সের জন্য নেতৃস্থানীয় আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক কমোডিটি এক্সচেঞ্জের কাছ থেকে সহযোগীতা নেয়া।
- প্রাথমিভাবে, অন্তর্নিহিত পণ্যগুলি সহজে পরিচালনা করার জন্য কমোডিটি ফিউচারস (বিশেষভাবে নগদ সেটেলম্যান্ট) দিয়ে কাজ শুরু করা । ধীরে ধীরে, স্টেকহোল্ডাররা তাদের নির্ভরযোগ্য কাঠামো নিয়ে এগিয়ে আসবে।
- একটি কৃষি-পণ্য বিপণন চ্যানেল এবং এর উপর নিয়ন্ত্রক নীতি কাঠামোর জন্য উন্নয়নের প্রচেষ্টা নেয়া ।
সুতরাং বিশ্বের অন্যান্য সফল দেশের মতো বাংলাদেশেও একটি আধুনিক এবং সময়োপযোগী কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ সরকারকেও একটি কার্যকর নীতি, আইনী ও নিয়ন্ত্রক পরিবেশ তৈরি করে কমোডিটি ফিউচারস এবং স্পট এক্সচেঞ্জের উন্নয়ন সহজ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভমিকা রাখতে হবে ।
সম্মানিত ইলেকট্রনিক, অনলাইন এবং প্রিন্ট মিডিয়া ভাইয়েরা আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, সিএসই বাংলাদেশে সর্বপ্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আগামী ১২ এপ্রিল ২০২২, বিকাল ০৪:০০ টায়, রেডিসন বুø ঢাকা ওয়াটার গার্ডেন এ অফশোর কনসালটেন্ট এর সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে । উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আসন অলংকৃত করবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মানণীয় বানিজ্যমন্ত্রী জনাব টিপু মুনশি, এমপি এবং এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ সিকিউরিটজি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এর সম্মানিত চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রী বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী এবং সম¥ানিত অতিথি হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশ সিকিউরিটজি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এর কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে মূল প্রতিবেদন প্রদান করেছেন জনাব ফয়সাল হুদা, ডেপুটি ম্যানেজার, সিএসই । উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিএসই এর চেয়ারম্যান জনাব আসিফ ইব্রাহিম, পরিচালক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসালাম, জনাব মো. লিয়াকত হোসেন চৈৗধুরী,এফসিএ, এফসিএমএ, জনাব মো. সিদ্দিকুর রহমান, জনাব মো. রেজাউল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) জনাব মো. গোলাম ফারুক এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ ।
বিস্তারিত জানতে,
তানিয়া
সিএসই-পি এন্ডসি আর
ফোন: ০১৭৬০৭৪৫৭৩৬
©2024 Chittagong Stock Exchange PLC. All rights reserved.